সূরা যারিয়াতের ৪৮ নম্বর আয়াতে পৃথিবীর বিস্তীর্ণ ও সমতল হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এখানে কি পৃথিবীর সমতল হওয়ার অর্থ বোঝায় না?

উত্তর

প্রিয় ভাই/বোন,


– আমরা কি এখন পৃথিবীকে একটা সমতল থালার মতো স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করছি না?

– আমরা যে ফসলগুলো বোই, সেগুলো কি সমতল ভূমিকে নির্দেশ করে না?

– আমাদের শহরগুলোর একটা বড় অংশ কি সমতল ভূমিতে অবস্থিত নয়?

এই এবং এ জাতীয় অনেক সত্যই প্রমাণ করে যে, পৃথিবী একটি বিছানার মতো বিস্তৃত, একটি সমতল শয্যার মতো বিছানো। অতএব, এখানে একটি সত্যকে ভালভাবে বোঝা প্রয়োজন। আর সেই সত্যটি হল: পৃথিবী একটি গোলক, কিন্তু একটি সমতল পৃষ্ঠ বিশিষ্ট গোলক। সাধারণত সমভূমি সমতল, সমুদ্র সমতল, তৃণভূমি সমতল। মানুষের বসবাসের, শুয়ে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য এটি একটি উপযোগী সমতল পৃষ্ঠ/তল বিশিষ্ট।

কোরআনে, পৃথিবীর এই নেয়ামতপূর্ণ দিক, জীবনের জন্য উপযোগী দিকটি দেখানোর জন্য, এর

বিছানা, দোলনা, পৃষ্ঠতল

এরকম বৈশিষ্ট্যগুলোর দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। তবে, পৃথিবী যে একটি গোলক তা দেখানোর জন্য, এবং এই বিষয়টি সঠিকভাবে বোঝার জন্য, যা সময়ের সাথে সাথে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, একটি আয়াতে পৃথিবীর গোলাকার, এমনকি উপবৃত্তাকার আকৃতির উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। নাযিয়াত সূরার ৩০ নম্বর আয়াতে পৃথিবীর বিন্যাস সম্পর্কিত যে অর্থটি দেওয়া হয়েছে তা হল:

“তারপর সে জায়গাটি গুছিয়ে বসবার জন্য প্রস্তুত করল।”

এই আয়াতে

“মেঝে”

শব্দটি দ্বারা প্রকাশ করা শব্দের আরবি মূল

“প্রতিভা”

হয়। এই শব্দটি,

“উদহিয়্যা / উদহুভ্বে”

এর মূল অর্থ উটের ডিম, যা এর গোলাকার আকৃতিকে বোঝায়। একই মূল থেকে আগত

“মেধা”

শব্দটি উটপাখির ডিম পাড়ার বাসা বোঝায়। উটপাখির ডিম পুরোপুরি গোলাকার না হয়ে উপবৃত্তাকার হয়। এই আয়াতে ব্যবহৃত শব্দটি হল…

“প্রতিভা”

এই শব্দটি অন্যান্য আয়াতের রূপক অর্থকে স্পষ্ট করে।

প্রায় পনেরো শতাব্দী আগে পৃথিবীর গোলাকার আকৃতিকে এত সূক্ষ্মভাবে বর্ণনা করে এমন একটি শব্দের ব্যবহার, অবশ্যই কোরআন আল্লাহর বাণী হওয়ার প্রমাণ।

এটাও মনে রাখা দরকার যে,

-যেমনটি আমরা উপরে উল্লেখ করেছি-

পৃথিবীর গোলাকার আকৃতি, তার

“তোশক, প্রদর্শনী, দোলনা”

এটি হওয়ার বৈশিষ্ট্যের পরিপন্থী নয়।


সালাম ও দোয়ার সহিত…

প্রশ্নোত্তরে ইসলাম

সর্বশেষ প্রশ্ন

দিনের প্রশ্ন